ঘুমের মধ্যে ঝাকুনি কিসের লক্ষণ ও শরীর কাপে কেন জানুন

ঘুমের মধ্যে ঝাকুনি কিসের লক্ষণ ও ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন সেই সম্পর্কে আসলে আমরা অনেকেই জানিনা। ঘুমের মধ্যে শরীর ঝাকুনি দিলে কিংবা শরীর কাপলে ঘুম ভেঙ্গে যায় এটি খুবই বিরক্তিকর রোগ তাই আমি আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব ঘুমের মধ্যে ঝাকুনি কিসের লক্ষণ ও শরীর কাপে কেন সে সম্পর্কে তো চলুন বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক।

ঘুমের মধ্যে কেঁপে উঠেন। সকলের সাথে না ঘটলেও পৃথিবীর প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষের সাথে এটি হয়ে থাকে। সব ক্ষেত্রে এটাই মিল যে সবাই অনুভব করে থাকে যে তারা যেন কোথাও থেকে একটা পড়ে যাচ্ছিল এমনটাই কিছু।

ঘুমের মধ্যে ঝাকুনি কিসের লক্ষণ মূলত স্বপ্নের মধ্যে কোন পাহাড় বা সিঁড়ির উঁচু ধাপ থেকে পড়ে যাওয়ার মত অবস্থায় ঘুম ভেঙ্গে যাই একে হিপনিক জার্ক বলা হয়ে থাকে। এ বিষয়ে আমরা আরো বিস্তারিত আলোচনা জানবো এবং ঘুমের মধ্যে ঝাকুনি কিসের লক্ষণ কেন হয় ও ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন এবং এটি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি সকল কিছু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ভূমিকাঃ

ঘুমের মধ্যে ঝাকুনি চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের ভাষায় এই ঝাঁকুনিকে বলা হয় হিপনিক জার্ক। এছাড়াও আরও এই ঝাঁকনির ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে যেমন মাইক্রোনিক ঝাঁক ইত্যাদি। মূলত এটি কোন রোগ নয় । 

তাই আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুবই মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন যে ঘুমের মধ্যে ঝাকুনি কিসের লক্ষণ সে সম্পর্কে। তাই এই পোস্টটি আজ আপনাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক ঘুমের মধ্যে ঝাকুনি কিসের লক্ষণ সেই সম্পর্কে সকল বিস্তারিত তথ্য।

ঘুমের মধ্যে ঝাকুনি কিসের লক্ষণ

হঠাৎ করে ঘুমাতে যাওয়ার ফলে বেশিরভাগ সময় ঘুমানোর কিছুক্ষণ পর শরীর ঝাকুনি দিয়ে উঠে বা হিপনিক জার্ক হয়ে থাকে। এ সময় মানুষ পুরোপুরি ঘুমের মধ্যে থাকে না অল্প ঘুমে ই মূলত এটি হয়ে থাকে। আসুন জেনে নিই এই হিপনিক জার্ক হয় কি জন্য এবং হিফোনিক হিপনিক জার্কের কারণ সমূহঃ

  • অতিরিক্ত মাত্রায় কফি পান করা
  • অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরের ব্যায়াম করা
  • রাতে ক্লান্তিকর কোন কাজ করলে
  • রাত জেগে টিভি দেখা
  • রাত জেগে মোবাইল ফোনে ফেসবুক বা ইন্টারনেট চালানো
  • অতিরিক্ত রাত জাগা
  • সারাদিন অতিরিক্ত খাটনি

বিশেষ করে শরীরের ম্যাগনেসিয়াম ক্যালসিয়াম ও আয়রনের অভাবে এই হিপনিক জার্ক হয়ে থাকে। মূলত এটি কোন রোগ নয় কিছু নিয়ম কারণ মেনে চললে এটি থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ।

শরীর ঝাকুনি দেয় কেন

কোন মানুষ যখন ঘুমাতে যায় ঠিক তার কিছুক্ষণ পরেই শরীরে ঝাকুনি দিয়ে ঘুম ভেঙে যায়। প্রথমে মূলত এটি কোন বড় ধরনের রোগ নয় যদি এটি নিয়মিত হয়ে থাকে তাহলে হোমিওপ্যাথি ওষুধ কয়েক ডোজ খাওয়ার ফলে এটি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যদিও প্রথমে বলেছি এটি জটিল কোন রোগ নয়। তাই হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের সাথে কথা বলে এই ওষুধটি খেয়ে দেখতে পারেন এগনেসিয়া 30।

ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন

ঘুমের মধ্যে হঠাৎই মনে হলো আপনি পড়ে যাচ্ছেন। নিন্দাময় অবস্থায় নিজেকে সামলাতে গিয়ে বুঝতে পারেন পুরো শরীরটাই যেন কেমনটা ঝাকুনি দিয়ে উঠলো। হয়তো স্বপ্ন দেখছিলেন। এমনটা হয়েছিল কখনো আপনার সাথে আপনার সাথে না হলেও এটি পৃথিবীর শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষের সাথে হয়ে থাকে। তো চলুন ঘুমের মধ্যে শরীর কাঁপে কেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

যারা ঘুমের মধ্যে এভাবে কেঁপে ওঠে, এটি একদিন দুইদিন নয় এটি ঘন ঘন হতে থাকে। যা বিজ্ঞানের ভাষায় হিপনিক জার্ক বলা হয়েছে। হিপনিক জার্ক নিয়ে একেকজনের অভিজ্ঞতা একেক রকম তবে সব ক্ষেত্রেই একটা জায়গায় মিল রয়েছে। সেটা হলো মনে হয় পড়ে যাচ্ছি বিজ্ঞানীদের ধারণা এই হিপনিক জার্কের বাহ্যিক কিছু কারণ থাকতে পারে।

আরো পড়ুনঃ নাভির চারপাশে ব্যথার কারণ ও করণীয়

তারা বলেছেন ক্যাফেইন ও তামাকে নেশা এ ধরনের হেচকা বাড়িয়ে দেয় তাই এই গবেষকদের পরামর্শ শুতে যাওয়া কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ক্যাফেইনেটেড জাতীয় ড্রিংক না খাওয়াই ভালো। তারা আরো জানিয়েছেন তাদের আরো দাবি অ্যাডেরাল ও রিটালিন জাতীয় ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াতেও এমনটা হয়।

এই হিপনিক জার্ক সাধারণত ঘুমের মধ্যেই ঘটে আবার ক্লান্তিতে শরীর ছেড়ে দিলে মস্তিষ্ক যখন দ্রুত ঘুমের তোড়জোড় শুরু করে ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না, মনে করে শরীর পড়ে যাচ্ছে তখনই এমন অনুভূত হতে পারে।

তবে দ্বিতীয় ধারণাটি বিরল বলে দাবি করেছে বিজ্ঞানীরা। তাদের ব্যাখ্যা বিশেষ কিছু রাসায়নিকের বিস্ফোরণ হলে বা মাত্রা বেড়ে গেলে শরীর ঝাকুনি দিয়ে ওঠে। মস্তিষ্ক তা না বুঝে উঠতে পেরে নিজের মত ব্যাখ্যা করে তড়িঘড়ি জাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে এই ঝাকুনি বা কাপনই হল হিপনিক জার্ক। তো আশা করি এবার চিন্তার কোন কারণ নেই কেননা ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন তা জানতে পেরেছেন।

ঘুমের মধ্যে পা ঝাকুনি কিসের লক্ষণ

আমাদের মূলত চোখের ঘুম চলে এলে হাত এবং পা বা পুরো শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ শিথিল হয়ে পড়ে। যার ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে এক প্রকার ভুল বার্তা পৌঁছায় মস্তিষ্কে যার ফলে ঝাকুনির মতো বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। এটি মূলত কোন প্রকার জটিল রোগ নয়।

ঘুমের মধ্যে খিঁচুনি কিসের লক্ষণ

খিচুনির সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত ছোট বড় থেকে শুরু করে সব বয়সেরই এই খিচুনি রোগটা হয়ে থাকে। অনেকে রয়েছে যারা ঘুমের মধ্যে খিচুনি কিসের লক্ষণ এবং কি কারণে হয়ে থাকে তা জানতে চেয়ে থাকে। ছোট বাচ্চাদের খিচুনি হলে এক ধরনের কারণ এবং বড়দের খিঁচুনি হলে আরেক ধরনের কারণে খিচুনি হয়ে থাকে দুইটি ভিন্ন ভিন্ন কারণে খিচুনি হয়।

যখন কোন বাচ্চা জন্মগ্রহণ করার পর খিচুনি হয় তখন আমরা ধরে নিবো যে এই বাচ্চাটির কোন শ্বাস বা নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে অথবা ধরে নেব শ্বাসনালীতে কোন কিছু আটকে আছে। এছাড়া একটা বাচ্চা যখন ডেলিভারি হয় তখন তার ব্রেনে রক্তক্ষরণ হয় আর এই কারণেও খিচুনি হতে পারে। এবং যেসব বাচ্চার বয়স পাঁচ থেকে ছয় মাস তাদের জ্বরের কারণে অনেক সময় খিচুনি হতে পারে।

এবং অনেক বাচ্চাদের জন্মগত ভাবে ডায়াবেটিস থাকে তাদেরও খিচুনি হতে পারে এর পাশাপাশি যাদের মাথাতে আঘাত পেয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও খিচুনি হতে পারে। কারো যদি মাথাতে টিউমার থাকে তাহলেও খিচুনি হতে পারে তাই কারো যদি খিচুনি হয় তাহলে ঘরে না বসে থেকে দ্রুত একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিব।

হিপনিক জার্ক থেকে মুক্তির উপায়

কিছু নিয়ম মেনে চললে এই হিপনিক জার্ক থেকে মুক্তির উপায় একদমই সহজ। বয়স বাড়ার সাথে সাথে হিপনিক জার্ক ঘটার সম্ভাবনা কমে যাই। এটি যুবক বয়সে বেশিভাগ সময় হয়ে থাকে যদি কারো অতিরিক্ত মাত্রায় হিপনিক জার্ক হয়ে থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ একটি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

ঘুমের মধ্যে গলা শুকিয়ে যাওয়ার কারণ

রাতে ঘুমের মধ্যে গলা শুকিয়ে যায় যার ফলে ঘুম ভেঙ্গে যায় অনেকেরই আবার কারো কারো পানির পিপাসায় ঘুম ভেঙে যায় শুধু শুধু গলা মুখ শুকিয়ে আসে ঠোঁট পর্যন্ত শুকিয়ে যায়। যদি প্রত্যেকদিন আপনি এই সমস্যার সম্মুখীন হন তাহলে শীঘ্রই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

মনে রাখবেন মূলত জেরোস্টোমিয়া রোগের কারণে মুখে লালা কমে যায় যার জন্য এই ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক কোন কোন কারণে মুখ শুকিয়ে যাওয়ার মত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এবং ঘুমের মধ্যে গলা শুকিয়ে যাওয়ার কারণ কি।

  • ওষুধের পার্শ্ব প্রতিকের কারণে এই রোগ হতে পারে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হতাশা, ব্যথা ও পেশি শীতলতার জন্য যে যে ওষুধ খেতে হয় তার ফলে ঘুমের মধ্যে গলা শুকিয়ে যেতে পারে।
  • কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় আমরা অনেকে ঘুমানোর সময় মুখ দিয়ে শ্বাস নিয়ে থাকে মূলত হাইপ্রশালী বেসনের কারণে এমনটা হয় সে কারণে মুখ শুকিয়ে যায়। নাক দিয়ে শ্বাস না নিয়ে মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার এক ধরনের অভ্যাস বলে মনে করেন অনেকে তবে বিষয়টি অবহেলা না করে এদের ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • যারা ধূমপান ও অ্যালকোহল পান করেন তাদেরও এই সমস্যা হতে পারে। জার্নাল ডেন্টাল রিসার্চ এর পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে যারা প্রতিদিন ধূমপান ও অ্যালকোহলে অভ্যস্ত এরকম ৩৯% শতাংশ মানুষের মুখে লালা উৎপাদন কমে গিয়েছে।
  • এছাড়া ডায়াবেটিস হলে মুখ শুকিয়ে আসতে পারে তাই ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় মুখ শুকিয়ে গেলে পরামর্শ নিন ডাক্তারের। আপনার শরীরে ডায়াবেটিসের প্রকোপ ঠিক কতটা তা জানা উচিত কারন এই উপসর্গ কিছু কিছু ক্ষেত্রে জানান দেয় শরীরে ডায়াবেটিসের উপস্থিতি।

ঘুমের মধ্যে বোবা ধরে কেন

আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছে যারা ঘুমানোর সময় হঠাৎ করে দেখে হাত পা নড়াতে পাচ্ছে না তারপর কিছুক্ষণ পর আবার স্বাভাবিক হয়ে যাই এর কারণ হচ্ছে ঘুমের মধ্যে বোবা ধরে। অনেকেই এটাকে বলে থাকে বোবা জিনে ধরলে এমনটা হয়ে থাকে। ঘুমের মধ্যে বোবা ধরার অনেক কানো রয়েছে আপনি যদি অপবিত্র থাকেন কিংবা চিৎ হয়ে শুয়ে ঘুমান তাহলে ঘুমের মধ্যে বোবা ধরার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ পেনিসের মাথায় গুটি গুটি চিকিৎসা

তাই এই বোবা ধরা থেকে বাঁচতে হলে বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে তার মধ্যে সেরা উপায় হচ্ছে কখনো চিৎ হয়ে ঘুমাবেন না হয়তো বাম পাশে ঘুমাবেন নয়তো ডান পাশ হয়ে ঘুমাবেন সবচেয়ে ভালো হয় ডান পাশ হয়ে ঘুমালে। এর পাশাপাশি চেষ্টা করবেন ঘুমানোর সময় সূরা আত্তাহিয়াতু পড়ে শরীরে ফু দিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার এতে অনেকটাই নিরাপদ থাকবে। আশা করি ঘুমের মধ্যে বোবা ধরে কেন তা জানতে পেরেছেন।

ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ কেন হয়

অনেকেই আছেন যারা ঘুমের মাঝখানে হঠাৎ করে লাফ দিয়ে উঠে বসেন মনে হয় যেন শ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল বা গলার ভেতর কিছু আটকে গেছে বা গলার ভিতর শুকিয়ে যাচ্ছে। অনেকের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটা প্রায়ই দেখা যায় তাই অনেকে ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ কেন হয় তা জানতে ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকে। এটি একটা খুবই কমন এবং মারাত্মক রোগ।

কিন্তু এই রোগটিকে আমরা সব থেকে বেশি এড়িয়ে চলি। রোগটির নাম হচ্ছে স্লিপ অ্যাপনিয়া অর্থাৎ ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া। যাদের ক্ষেত্রে স্লিপ অ্যাপনিয়া হয় তাদের ক্ষেত্রে ঘুমের মধ্যে অনেক সময় হার্ট অ্যাটাক হয় যার দরুন মৃত্যু ঘটে। তাই আপনার যদি এই সমস্যা থেকে থাকে দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আশা করি ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ কেন হয় তা এবার জানতে পেরেছেন।

লেখকের শেষ কথা

আশা করছি আপনি উপরের কথাগুলো খুবই মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং ঘুমের মধ্যে ঝাকুনি কিসের লক্ষণ ও ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন এ সম্বন্ধে ধারণা অর্জন করতে পেরেছেন। এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে অন্যদের সাথে শেয়ার করে দিবেন । এবং আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট এর মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Comment