টনসিল ক্যান্সারের লক্ষণ | টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে না

প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে টনসিল ক্যান্সারের লক্ষণ কি কি এবং টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে না সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। টনসিলে আক্রান্ত হয়নি এমন মানুষ খুবই কম পাওয়া যাবে। টনসিল হলে কখনোই এটিকে অবহেলা করা উচিত নয় কারণ এটি একটি মারাত্মক রোগ। আপনি যদি টনসিলের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে এই পোষ্টটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।

অনেক মানুষই আছেন যাদের টনসিল হলে এটিকে অবহেলা করেন এটা কখনোই করা উচিত নয় এই টনসিল থেকে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে তাই এই টনসিলসম্পর্কে আমাদের সবারই সচেতন থাকা উচিত। এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়লে টনসিল ক্যান্সারের লক্ষণ কি কি এবং টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে না সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। 

ভূমিকা

এই শীতকালে ঠান্ডা লাগা খুবই স্বাভাবিক কিন্তু এই সময়ে অনেকেরই গলায় টনসিল হয়ে থাকে। আর এই টনসিল হলে ঢোক গিলতে অনেক কষ্টকর হয়ে ওঠে আবার যে কোন খাবার খেতে গেলেও গলায় লাগে। আমাদের মুখের ভিতরে জন্মগতভাবে ৪ ধরনের টনসিল থাকে সেগুলো হলোঃ প্যালাটাইন, লিঙ্গুয়াল, টিউবাল এবং ফ্যারিঞ্জিয়াল টনসিল। 

এই চারটির টনসিলের মধ্যে কোন একটা আঘাতপ্রাপ্ত হলে সেই অবস্থাকে টনসিল বলা হয়ে থাকে। এই টনসিল ছোট বড় প্রায় সকলেরই হয়ে থাকে। নিচে টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে না এবং টনসিল ক্যান্সারের লক্ষণ কি কি এর পাশাপাশি টনসিলের ঘরোয়া চিকিৎসা ও টনসিল অপারেশন খরচ কত ইত্যাদি আরো অনেক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

টনসিল কেন হয়

অনেক মানুষই জানতে চেয়ে থাকেন টনসিল কেন হয়। টনসিল কে চিকিৎসার পরিভাষায় টনসিলাইটিস বলা হয়ে থাকে। আমাদের সবারই গলার ভিতরে দুটি গ্ল্যান্ড থাকে জিব্বার পিছন দিকে দুই সাইডে দুটি গোল গোল গ্ল্যান্ড থাকে যেটাকে মূলত টনসিল বলা হয়। একেকজনের একেক রকম সাইজের টনসিল গ্ল্যান্ড থাকে কারো খুব বড় আবার কারো খুব ছোট। 

টনসিল গ্ল্যান্ড এ যখন ইনফেকশন হয় তখন সেটাকে টনসিল বলা হয়ে থাকে। এই টনসিল হওয়ার কারণ হচ্ছে পুষ্টির অভাব, আইসক্রিম, ফ্রিজে রাখা শীতল পানি পান করা এই রোগের কারণ পাশাপাশি শীতে এ রোগের প্রকোপ বেশি দেখা দেয় আবার গরম কালে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি বা বরফ জাতীয় কিছু খেলে এই সমস্যাও হতে পারে।

টনসিল যখন হয় এটা এমনি এমনি ভালো যেতে পারে তবে ভাইরাল ইনফেকশন যদি হয় সেক্ষেত্রে সাধারণত ৪ থেকে ১০ দিন ক্ষেত্রে বিশেষে ১০-১৪ দিনের মধ্যে টনসিলের সমস্যাটি সেরে উঠে।

টনসিল হলে কি কি সমস্যা হয়

অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন টনসিল হলে কি কি সমস্যা হয় অর্থাৎ টনসিল ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো কি কি। শীতকালের একটি জটিল রোগ হচ্ছে টনসিল। সাধারণত ৩ থেকে ১৪ বছরের শিশুদের মধ্যে বেশি এই টনসিল দেখা যায়। এমন কিছু লক্ষণ আপনার শরীরে দেখা যাবে যা দেখে বুঝতে পারবেন আপনার টনসিল হয়েছে। চলুন তাহলে টনসিল হলে কি কি সমস্যা হয় সেই গুলো জেনে নেওয়া যাক।

  • তীব্র গলা ব্যথা
  • মাথা ব্যথা করা
  • খাবার খেতে কষ্ট হওয়া
  • মুখ হাঁ করতে অসুবিধা হওয
  • কান ব্যথা করা
  • জ্বর ও কাশি হওয়া
  • মুখ দিয়ে লালা বের হওয়া
  • কণ্ঠস্বর ভারী হওয়া
  • মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়া
  • শিশুর খাবার গ্রহণে অনীহার ও নাক দিয়ে পানি ঝরতে পারে
  • গলার বাহিরে ফুলে যেতে পারে

টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে না

যাদের টনসিল ইনফেকশন হয় তখন তাদের গলা ব্যথা হয় খেতে কষ্ট হয় জ্বর আসে এবং ব্যথার ওষুধ খেতে হয় ও ডাক্তারের কাছে যেতে হয় এবং অনেক সময় এন্টিবায়োটিক খেতে হয় এভাবে কোনরকমে একবারের জন্য টনসিল ইনফেকশন থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে কিছুদিন পরে দেখা যায় আবার টনসিল ইনফেকশন হয় তো এরকম যাদের বারবার টনসিল ইনফেকশন হয়।

কিন্তু যারা টনসিলের অপারেশন করাতে চান তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে আমি মনে করি কারণ এই আর্টিকেলে আলোচনা করব কি সকল খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকলে টনসিল বা গলার ইনফেকশন অনেক অংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। চলুন তাহলে টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে না সেই সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। 

১. ঠান্ডা পানিঃ প্রথমে যে জিনিসটা নিয়ে আমরা কথা বলবো তা আপনারা অনেকেই জানেন সেটা হচ্ছে ঠান্ডা পানি। অনেকেই আছেন যাদের ফ্রিজের ঠান্ডা পানি না খেলে তাদের তৃষ্ণায় মেটে না। আমরা জানি গরমকালে বা যখন আমাদের তৃষ্ণা লাগে তখন ঠান্ডা পানি খেতে ভালো লাগে।

কিন্তু আপনাদের মধ্যে যারা টনসিলের ইনফেকশনে বা টনসিলের রোগে ভুগছেন তাদের জন্য ঠান্ডা পানি খাওয়া একদমই উচিত নয়। কারণ যখন আমার ঠাণ্ডা পানি বা ঠান্ডা খাবার খাই তখন আমাদের টনসিলের বা গলার ভিতরে যে ফ্যারিংস নামক যে জায়গা সেখানকার লোকাল ইমিউনিটি ড্রপ করে।

লোকাল ইমিউনিটি ড্রপ করার কারণে তখন সেখানে ইনফেকশনটা বেশি বেশি হতে পারে এ কারণেই দেখা যায় যে আমরা যখন বেশি বেশি ঠান্ডা পানি বা আইসক্রিম খাই তখন কিন্তু আমাদের ঠান্ডা লেগে যাওয়া এবং টনসিল ইনফেকশন হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে তাই যারা টনসিলের সমস্যায় ভুগছেন তারা ঠান্ডা পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

২. ঠান্ডা খাবারঃ যারা ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার খান বিশেষ করে দেখা যায় যে ঠান্ডা কোন পায়েস বা পুটিং ইত্যাদি ঠান্ডা কোন খাবার খান তারা সরাসরি ফ্রিজ থেকে বের করে খাবেন না তাদের জন্য আমার পরামর্শ থাকবে যে আপনারা ওই খাবারটাকে ফ্রিজ থেকে বের করে কিছুক্ষণ বাইরে রাখুন তারপর ঠান্ডা কমে গেলে তারপর খান।

৩. আইসক্রিমঃ টনসিল রোগীদের আইসক্রিম না খাওয়াই ভালো এর পিছনে ২ টি কারণ প্রথমটি হচ্ছে আইসক্রিম ঠান্ডা আর আরেকটি হচ্ছে আইসক্রিমে অনেক বেশি আর্টিফিশিয়াল ফ্লেভার এবং আর্টিফিশিয়াল সুইটনার এবং অনেক সময় চিনি অনেক বেশি পরিমাণে থাকে। 

তো চিনি থাকার কারণে ডেন্টাল কাভিটিজ এবং ডেন্টাল ইনফেকশন সেগুলো হওয়া সম্ভাবনা বেড়ে যায় এর পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে গলার ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় তাই আইসক্রিম থেকে যতটা পারা যায় দূরে থাকতে হবে।

৪. কোল ড্রিংকসঃ আইসক্রিমের পাশাপাশি কোল ড্রিংকস যেটা রয়েছে সেটাও কিন্তু এই একই দোষে দুষ্ট মানে হচ্ছে যে এই কোল ড্রিংকসও ঠান্ডা এবং এর মধ্যে অনেক বেশি সুগার থাকে বিশেষ করে বাচ্চাদের যাদের এরকম কোমল পানীয় খাবার একটা অভ্যাস হয়ে যায় তারা সবসময় দেখা যায় যে বাবা-মার কাছে আবদার করে যে আমাকে কোল ড্রিংকস কিনে দাও ইত্যাদি। 

আরো পড়ুনঃ গ্যাসটোনা ট্যাবলেট কি কাজ করে

যারা বাচ্চার বাবা-মা আছেন তাদেরকে এই বিষয়ে একটু সচেতন হতে হবে বাচ্চাদেরকে এই সকল কোল্ড্রিংস খাওয়া থেকে নিষেধ করতে হবে এবং যারা বড়রাও আছেন তারাও কোল ড্রিংকস যতটা না পারা যায় কম করে খাওয়া যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

কারণ আমি আগেই বলেছি যে কোল ড্রিংকস ঠান্ডা এবং এতে আছে অনেক বেশি সুগার কন্টেন যার দুটোর কোনটাই আপনার জন্য ভালো নয় এবং বেশি বেশি কোল ড্রিংকস এবং আইসক্রিম খেলে টনসিলের সমস্যা যে হবে তাতে কিন্তু কোন সন্দেহ নেই।

৫. ধূমপান এবং অ্যালকোহলঃ যারা ধূমপান করেন তারা মনে করে ধূমপান করলে শুধু ক্যান্সার হয় তা কিন্তু নয়। আপনারা হয়তো জানেন না যে ধূমপান করলে টনসিলের সমস্যা বেশি হতে পারে।ধূমপান আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর এজন্য অবশ্যই ধূমপান করা থেকে দূরে থাকতে হবে।

৬. ঝাল মসলাযুক্ত খাবারঃ ঝাল মসলা যুক্ত খাবার বেশি বেশি খাওয়া যাবে না কারণ অতিরিক্ত ঝাল মসলাযুক্ত খাবার খেলে টনসিলের জায়গা জ্বালাপোড়া করতে পারে এবং বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই অতিরিক্ত ঝাল মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।

৭. প্যাকেট জাতীয় খাবারঃ অনেক সময় আমরা চিপস,মুড়ি, খই ইত্যাদি খাবার খেয়ে থাকি কিন্তু যাদের টনসিলের সমস্যা রয়েছে তারা এই সকল খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ চিপস,মুড়ি, খই এগুলো খাওয়ার সময় টনসিলের গর্তের মধ্যে ঢুকে যায় এবং টনসিলের স্টোন সহ বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে তাই এইসব খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

টনসিল ক্যান্সারের লক্ষণ

অনেকেরই দেখা যায় যে টনসিল ক্যান্সার রোগ নির্ণয় হওয়ার পরও বিশেষ কোন লক্ষণ দেখা যায় না। টনসিলে ক্যান্সার হওয়ার মূল লক্ষণ হচ্ছে একটি টনসিলের থেকে আরেকটি টনসিলের সাইজ বড় হবে এছাড়া টনসিল ক্যান্সারের সাধারণ কিছু লক্ষণ রয়েছে সেগুলি হলঃ

  • কানে ব্যথা, বিশেষ করে একটি কানে
  • মুখ থেকে রক্ত পড়া
  • ঘন ঘন গলা ব্যথা করা
  • দ্রুত ওজন কমে যাওয়া
  • শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
  • মুখ খুলতে অথবা খাবার গিলতে অসুবিধা হওয়া
  • খাবারের প্রতি অরুচি
  • গলার ভয়েস পরিবর্তন

আপনার মধ্যে যদি এই উপসর্গগুলি দেখা যায় তাহলে দ্রুত একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন কারণ একজন ডাক্তারি ভালো বলতে পারে আপনার টনসিলে ক্যান্সার হয়েছে কিনা।

টনসিল ফুলে গেলে করণীয়

আপনি যদি টনসিলের সমস্যায় ভুগে থাকেন এবং টনসিল ফুলে গিয়ে থাকে তাহলে এক গ্লাস হালকা গরম পানির সাথে পরিমাণ মতো লবণ মিশিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট গার্গল করুন এইভাবে যদি আপনি প্রতিদিন দিনে দুইবার করে করেন তাহলে দেখবেন আপনার টনসিল ফোলা ভাব অনেকটাই কমে যাবে।

এছাড়া আপনি পুদিন চা খেতে পারেন এবং গ্রিন টির সাথে মধু মিশিয়ে গরম গরম খেতে পারেন এতে আপনার টনসিলের ফোলা এবং ব্যথা দূর করতে সহায়তা করবে। আর যদি এইসব করেও আপনার টনসিলের ফোলা দূর না হয় তাহলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

টনসিলের ঘরোয়া চিকিৎসা

শীতের সময়ে ঘরে ঘরে একটি রোগ দেখা যায় সেটি হচ্ছে টনসিল যা ছোট বাচ্চাদের বেশি হয়ে থাকে। শীতকাল ছাড়াও ঠান্ডা বা বর্ষাকালেও টনসিলের সমস্যা দেখা যায়। বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন থেকেই এই টনসিল হয়ে থাকে। এই টনসিলের ব্যথা অনেক কষ্টদায়ক। টনসিলের ব্যথায় ছুটতে হয় ডাক্তারের কাছে। 

তো আপনার জন্য খুশির খবর হল ঘরে বসেই এই টনসিলের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে চলুন তাহলে টনসিলের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

  • হলুদের গুড়াঃ হলুদ কিন্তু কাটা ছেঁড়া, ফোলা দূর করতে সাহায্য করে। প্রথমে হলুদের গুড়া এক চামচ নিয়ে নিতে হবে তারপর মুখে ঢুকিয়ে ধরে রাখতে হবে ৩ থেকে ৪ মিনিট ফলে এটা গলার মধ্যে চলে যাবে তারপর গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করে ফেলে দিতে হবে এইভাবে দিনে ২ থেকে ৩ বার করবেন তাহলে দেখবেন আপনার টনসিলের ব্যথা এবং ফোলা দূর হয়ে গেছে।
  • লবণ পানিঃ টনসিল হলে গলা ব্যথা করে আর এই গলা ব্যথা দূর করার সহজ উপায় হচ্ছে লবণ পানি। এই লবণ পানি অত্যন্ত কার্যকরী গলা ব্যথা দূর করার জন্য। এক গ্লাস গরম পানির ভিতর এক চিমটি লবণ মিশিয়ে গড়গড়া করুন দেখবেন আপনার টনসিলের ব্যথা দূর হয়ে গেছে।
  • লেবুর রস, মধু ও গরম পানিঃ এক গ্লাস হালকা গরম পানির ভিতর এক চামচ মধু, এক চামচ লেবুর রস এবং হাফ চামচ লবণ মিশিয়ে আস্তে আস্তে খেয়ে ফেলুন এতে আপনার টনসিলের ব্যথা তৎকালীন দূর হয়ে যাবে।
  • মধু ও তুলসীর মিশ্রণঃ বাচ্চাদের টনসিলের সমস্যা দূর করতে মধু এবং তুলসীর মিশ্রণ অত্যন্ত কার্যকরী।তুলসীতে রয়েছে এমন কিছু গুন যা প্রদাহ কমাতে সক্ষম এবং মধুতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ তাই এই মধু এবং তুলসীর মিশ্রণ যদি আপনার বাচ্চাকে খাওয়ান তাহলে টনসিলের ব্যথা দূর হতে সময় লাগবে না।
  • মধু ও চা পাতাঃ এক গ্লাস গরম পানির ভিতর এক চামচ মধু এবং এক চামচ সবুজ চা পাতা দিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন তারপর আস্তে আস্তে ঢোক গিলে খেয়ে ফেলুন। এই চায়ে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্ষতিকর জীবাণুকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
  • ছাগলের দুধ এবং হলুদঃ আপনারা হয়তো জানেন না ছাগলের দুধ ব্যথা দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী কেননা এই ছাগলের দুধে রয়েছে এন্টিবায়োটিক উপাদান তাই এক গ্লাস গরম ছাগলের দুধের সঙ্গে এক চামচ হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাবেন।

টনসিল অপারেশনের পর খাবার তালিকা

এই অংশে আলোচনা করব সেটি হচ্ছে টনসিল অপারেশনের পর রোগী কি কি খাবে এবং কি কি খাওয়া যাবেনা সে বিষয়ে। অপারেশনের পর সাথে সাথেই কিছু খাওয়ানো যাবে না। টনসিল অপারেশনটি করা হয় সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে এই অজ্ঞানের প্রভাব মুক্ত হতে মোটামুটি তিন চার ঘন্টা সময় লেগে যাই তো এই ৩-৪ ঘন্টা রোগীকে কোন কিছু খাওয়ানো যাবে না রোগীকে সম্পন্ন খালি পেটে থাকতে হবে।

আরো পড়ুনঃ পেনিসের মাথায় গুটি গুটি ও ফুসকুড়ি চিকিৎসা

এবং এই ৩-৪ ঘণ্টা পর থেকে আস্তে আস্তে রোগীকে চামচ দিয়ে ঠান্ডা পানি ও ঠাণ্ডা জুস দিয়ে দেখতে হবে যে রোগীর কোন বমি ভাব হচ্ছে কিনা যদি বমি ভাব না হয় যদি স্বাভাবিকভাবে খেতে পারে তাহলে রোগীকে প্রথম ৫-৭ দিন একটু নরম জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে।

তবে খুব বেশি শক্ত খাবার নয় যেগুলো চিবিয়ে খেতে হয় এত বেশি শক্ত না। মাংস, কাটাযুক্ত মাছ বা অতিরিক্ত ঝাল মসলাযুক্ত খাবার যেগুলো খেলে ভিতরে জ্বালা হবে এই সব খাবার পরিহার করতে হবে। চানাচুর, ফুচকা এই জাতীয় কিছু শক্ত খাবার আছে যেগুলো গলায় খোঁচা লাগতে পারে এই খাবারগুলো পরিহার করতে হবে।

তাহলে রোগী কি কি খাবে? রোগী খাবে একটু নরম এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রার খাবার। অপারেশনের পর থেকে প্রথম ২৪ ঘন্টা প্রচুর ঠান্ডা পানি এবং আইসক্রিম খাবে এতে মুখ পরিষ্কারও থাকবে এবং যে জায়গাগুলো থেকে টনসিল কেটে বের করা হয়েছে সেখানে রক্তপাত বন্ধ করতে সহায়তা করবে।

নরম জাতীয় খাবারের তালিকাঃ

  • ফলের জুস
  • যাও ভাত
  • সুখ
  • নরম খিচুড়ি ও ভাত
  • ডাল
  • সেমাই
  • ফিন্নি

উপরের উল্লেখিত এই নরম জাতীয় খাবারগুলি প্রথম ৫ থেকে ৭ দিন বারবার খেতে হবে যাতে মুখটা পরিষ্কার থাকে এবং মুখে যে থুতু গুলো ওইগুলো যেন টনসিল যেখান থেকে কেটে বের করা হয়েছে সেখানে যেন থুতু জমে না থাকে কারণ থুতু সেখানে জমে থাকলে ইনফেকশন হতে পারে।

এবং প্রতিবার খাওয়ার পর মাউথ ওয়াশ দিয়ে খুব ভালো করে গার্গাল করতে হবে যাতে খাবারের কণাগুলো মুখে লেগে না থাকে কারণ টনসিল কেটে যেখান থেকে বের করা হয়েছে সেই জায়গাগুলোতে যেন খাবারের কণাগুলো জমে গিয়ে ইনফেকশন না তৈরি হয় সেজন্য।

লেখকের শেষ কথা

আপনি যদি টনসিল সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে বিশেষ করে ঠান্ডা জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং ডাক্তারের চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে তাহলেই আপনি এই টনসিল থেকে খুব দ্রুত মুক্তি পেতে পারেন।

প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে টনসিল ক্যান্সারের লক্ষণ এবং টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে না এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আশা করি আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়েছেন আমাদের এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করে দিবেন এবং এরকম বিভিন্ন তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটিতে প্রতিনিয়ত চোখ রাখতে পারেন ধন্যবাদ।

Leave a Comment