ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ ও পেইন উঠানোর উপায় জেনে নিন

ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় ও ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ কি কি তা আমরা অনেকেই জানিনা। তাই আমি আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় ও ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ কি কি সেই সম্পর্কে। আপনি যদি একজন গর্ভবতী মা হয়ে থাকেন এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে তো চলুন ডেলিভারি পেইন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

সাধারণত গর্ভকালীন সময় ৯ মাস বা ৪০ সপ্তাহ এই সময়ের মধ্যে বা শেষে সচরাচ বেদনা হবার কথা। যদি কোন কারনে এরকম ব্যথা না উঠে তখন ওষুধের মাধ্যমে বা কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে কৃত্রিমভাবে ডেলিভারি পেইন উঠানো হয়ে থাকে। এ বিষয়ে আমরা আরো বিস্তারিত আলোচনা জানবো এবং ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় ও ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ সকল কিছু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ভূমিকা

প্রেগন্যান্সী একটি অনেকটাই লম্বা যাত্রা। আর যার শেষ হয় লেবার বা প্রসবের মাধ্যমে বাচ্চা জন্ম দিয়ে। বর্তমান যুগে ডেলিভারি পেইন তোলার অনেক কৃত্রিম উপায় রয়েছে। প্রসব যত দূরে সম্ভব প্রাকৃতিক উপায়ে রাখায় ভালো। তাই প্রাকৃতিক ভাবে ডেলিভারি পেইন শুরু হলে একজন মহিলার লক্ষ্যবস্তু হওয়া দরকার।

যেহেতু প্রত্যেক জনেরই শরীর ভিন্ন ভিন্ন রকম হয় সেক্ষেত্রে সবার জন্য ডেলিভারি পেইন এক সময় হবে এটি ভুল ধারণা। প্রেগনেন্সি শেষের একটি নির্দিষ্ট বা নির্ধারিত সময় রয়েছে, যেটি একজন মায়ের ক্ষেত্রে ভিন্ন রকম হতে পারে। ঝুঁকিমুক্ত প্রেগনেন্সিতে ৪০ সপ্তাহ থেকে মায়েরা ডেলিভারি পেইন প্রাকৃতিক উপায়ে শুরুর জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে। 

তাই আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুবই মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন যে ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় ও ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ সে সম্পর্কে। তাই এই পোস্টটি আজ আপনাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে।

ডেলিভারি পেইন কেমন হয়

ডাক্তাররা ডেলিভারি একটি নির্দিষ্ট ডেট দিয়ে থাকে আর সেই ডেটটা যত কাছে আসতে থাকে তত নতুন মায়ের ভেতর কিন্তু ততই বেশি আতঙ্ক কাজ করে। আর সেজন্যই অনেক মা ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে জানতে চেয়ে থাকে ডেলিভারি পেনই কেমন হয় এবং ডেলিভারি পেইন হলে কিভাবে বুঝবো। তো ডেলিভারি পেইন বোঝার জন্য আমরা যেটা বলি যে পৃথিবীতে একটা মাত্র পেইন অথবা ব্যথা আছে যেটাকে অনুভব করা যায় তার মানে কি। 

তার মানে হচ্ছে ডেলিভারি পেইন যখন উঠবে তার সাথেও কিন্তু পেটটাও শক্ত হয়ে যাবে। যিনি গর্ভবতী মা আছে যদি অনুভব করেন যে তার ব্যথা হচ্ছে তাহলে সাথে সাথে পেটে হাত দিবেন। পেটে হাত দিয়ে যদি দেখেন পেটটা শক্ত হয়ে গেছে তাহলে সেটা ডেলিভারি পেইন হওয়া সম্ভাবনা। 

কারণ ডেলিভারির পেইনের আরেকটা যেটা বিশেষত্ব সেটি হচ্ছে সেই পেইনটা অথবা ব্যথাটা কিন্তু একটানা হয় না থেমে থেমে ব্যথা হয়। যেমন এখন ডেলিভারি পেইন উঠলো এবং সেটা কয়েক সেকেন্ড থাকলো তারপর আবার চলে যায়। চলে যাওয়ার পর ২০-৩০ মিনিট পর আবার ব্যথাটা উঠে এবং আবার কয়েক সেকেন্ড থাকে তারপর আবার চলে যাই। আশা করি ডেলিভারি পেইন কেমন হয় তা জানতে পেরেছেন।

ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ

গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কাজী ফিরোজা আক্তার এর মতে ৩২ সপ্তাহের পর থেকে পেশেন্টদের একটু একটু করে পেইন হতে থাকে, এই পেইন তাকে আমরা বলে থাকি এক ধরনের ফলস পেইন এটি দিনে একবার বা সর্বোচ্চ দুইবার হয়ে থাকে। এবং পেইন এর সাথে পেট ও শক্ত হতে থাকে। কিন্তু অনেক মায়েরা মনে করে হয়তো মনে হয় উনার ডেলিভারি পেইন উঠে গেছে এবং অনেকে ভয় পেয়ে ডাক্তারের কাছে যাই। 

কিন্তু ডেলিভারি পেইনের লক্ষণটা পুরোটাই আলাদা। সাধারণত ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ ৩৭ সপ্তাহের পর থেকে শুরু হয়ে থাকে। পেইন হয় কোমর থেকে যাকে আমরা বলে থাকি ব্যাক পেইন। পেশেন্ট মনে করে তার কোমরে পেইন হচ্ছে এবং পেইন আস্তে আস্তে তলপেটের দিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে ও তার জরায়ু পেটটি শক্ত হয়ে যাচ্ছে। 

আরো পড়ুন: মুখের চাপা ভরাট করার ঔষধ

এটি মূলত প্রথম অবস্থায় প্রতি ৩০ মিনিটে ২ বার হতে পারে। কিন্তু ধীরে ধীরে এটির তীব্রতা এবং স্থায়ী পেইন বাড়তে থাকে। ডাক্তার আপনার ডেলিভারির যে সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছেন সে তারিখ অনুযায়ী গর্ভাবস্থার শেষের দিনগুলোতে, অথবা সে সপ্তাহে অথবা শেষ মাসের দিকে আপনি ডেলিভারি পেইন লক্ষণগুলো খেয়াল করা শুরু করবেন। চলুন ভালোভাবে ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ গুলো কি কি তা জেনে নেওয়া যাক।

১. শিশু নিচের দিকে নেমে আসা বা লাইটেনিংঃ এটি যদি আপনার প্রথম সন্তান হয় তাহলে ডেলিভারির কয়েক সপ্তাহ আগে হয়তো আপনি ‘লাইটেনিং’ বা হালকা লাগার ব্যাপারটা অনুভব করতে পারবেন। লাইটেনিং অর্থ আপনার শিশু পেটের নিম্ন ভাগে চলে এসেছে। শিশু নিম্নভাগে চলে আসার বুকের হাড়ের ঠিক নিচে যে চাপ এত দিন অনুভব করতেন সেটা এখন কমে যাবে এবং নিঃশ্বাস নেয়া সহজ হবে।

২. বুক জ্বালাপোড়া কমে যাবেঃ আপনার যদি গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়া করতো কিংবা বুক জ্বালাপোড়া সমস্যায় ভুগতেন তাহলে এই সময় এসে আপনি বুক জ্বালাপোড়া কিছুটা কমে যেতে পারে।

৩. বারবার ব্রেক্সটন হিকস কন্ট্রাকশন হওয়াঃ ঘন ঘন এবং তীব্রমাত্রায় ব্রেক্সটন হিকস কন্ট্রাকশন বা ফলস লেবুর পেইন এর মাধ্যমে আপনি ‘ফ্রি লাবোরের’ সিগনাল পেতে পারেন। ফ্রি লাবোরের সময় সারভিক্স বা জরায়ুমুখ পাতলা ও প্রশস্ত হতে থাকে এবং সত্যিকারের প্রসবের জন্য প্রস্তুত হয়ে ওঠে। কিছু কিছু নারীদের পিরিয়ডের মত ক্রাম্প হতে পারে।

৪. সারভিক্স বা জরায়ুর মুখের পরিবর্তনঃ ডেলিভারির কিছুদিন অথবা কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে সারভিক্সের কানেক্টিভ টিস্যুর পরিবর্তনের ফলে সারভিক্স ধীরে ধীরে পাতলা ও প্রশস্ত হতে থাকে। সার্ভিসের পাতলা হয়ে যাওয়াকে বলে এফেসমেন্ট এবং এর মুখ খোলা কে বলে ডায়ালেশন। 

আপনি যদি আগে কোন সন্তান জন্ম দিয়ে থাকেন তাহলে পৌষ শুরু হওয়ার আগে সারভিক্স ১ থেকে ২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত প্রশস্ত হতে পারে। কিন্তু আপনার প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে মনে রাখবেন, যদি গর্ভাবস্থায় ৪০ সপ্তাহ হয়ে যায় এবং ১ সেন্টিমিটারের মতো প্রশস্ত হয় তবুও নিশ্চিত বলা সম্ভব নয় যে ডেলিভারি হয়ে যাবে।

৫. অল্প পরিমাণে রক্তপাতঃ যখন কোমল এবং প্রশস্ত হতে থাকে তখন হালকা রক্তযুক্ত গোলাপী যৌনস্রাব বা উজ্জ্বল লাল বর্ণের রক্ত বের হতে পারে। নিউকাস প্লাগ নিশ্চিত হওয়ার সময় যদি রক্তপাত হয় তাহলে নিউকাশের রক্ত লেগে থাকতে পারে আবার এমনিতেও রক্তপাত হতে পারে।

ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায়

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ এবং সার্জন স্পেশাল ডঃ নুসরাত জাহান জানান একটি নির্দিষ্ট সময় পর ডেলিভারি পেইন অটোমেটিক ওঠে যদি এক্ষেত্রে ভিন্ন হয় তাহলে ইনজেকশন এর মাধ্যমে এটি তোলা হয়ে থাকে। দেখা যায় বেশি সময় সিজার কে এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই এমনটি করা হয়। 

যদিও এমনটা হয় ডেলিভারি ডেট পার হয়ে গেছে কিন্তু এক সপ্তাহ পর ডেলিভারি পেইন যদি না উঠে সে ক্ষেত্রে ইনজেকশন এর মাধ্যমে ডেলিভারি পেইন তোলা হয়। এছাড়াও কোন কারনে যদি বাচ্চা ডেলিভারি দরকার হয়ে পড়ে, যেমন কোন মায়ের যদি পানি ভেঙ্গে যায় বাচ্চা ম্যাচিউর অবস্থায় তখন ২৪ ঘন্টা অপেক্ষা করতে পারে অটোমেটিক ডেলিভারি পেইন উঠে কিনা দেখার জন্য। 

এর মধ্যে যদি অটোমেটিক ডেলিভারি পেইন না উঠে সেক্ষেত্রে ইনফেকশনের ভয়ে ইনজেকশন এর মাধ্যমে ডেলিভারি পেইন তোলা হয়। এছাড়াও আরো কিছু ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় আছে। অনেকেই আছেন যাদের সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরেও কোনভাবেই ডেলিভারি পেইন উঠছে না যার কারণেই কিন্তু সময় পার হয়ে যাচ্ছে এবং সি সেকশনের দিকে ঝুঁকে যেতে হচ্ছে। অথচ আপনি চেয়েছিলেন আপনার নরমাল ডেলিভারি হোক। 

ডক্টরের কাছে গেলে স্যালাইন স্যালাইন এর মাধ্যমে ইনজেকশন পুশ করে ডেলিভারি পেইন উঠানো সম্ভব তবে অনেকেই এই কাজটি করতে চান না। কারণ অনেকেই চাই প্রাকৃতিকভাবে ডেলিভারি পেইন উঠানোর। প্রাকৃতিকভাবে ডেলিভারি পেইন উঠানোর জন্য দুটি পদ্ধতি আছে। আর কথা বাড়াবো না জানিয়ে দিচ্ছি সে দুটি উপায় সম্পর্কে যা আপনারা করে দেখতে পারেন এই উপায় গুলো একশতভাগ বিজ্ঞানসম্মত নয় তবে অনেক ক্ষেত্রে এই উপায় গুলো কাজ করে। 

১. ডেলিভারি পেইন উঠানোর প্রথম উপায়ঃ প্রথম যে কাজটি করতে হবে আপনার স্তন বিন্দুর আশেপাশে যে কালো এরিয়া আছে সেই কালো এরিয়ায় দুই হাতের আঙ্গুল দিয়ে আলতো আলতো করে মাসাজ করুন এবং অনুভব করুন আপনার সন্তান আপনার দুগ্ধ পান করছে। এভাবে ডান হাত দিয়ে বাম পাশের স্তন এবং বাম হাত দিয়ে ডান পাশের স্তন দু তিন মিনিট ধরে করতে থাকুন। 

আপনি অবশ্যই এই কাজটি করার সময় একলা ও নীরবে নিভৃতে করতে হবে আপনার সম্পূর্ণ মনোযোগ থাকতে হবে এ কাজের ওপরে চোখ বন্ধ করে আপনি অনুভব করুন সন্তানকে দুগ্ধ পান করাচ্ছেন দিনে তিন থেকে চার বার দুস্থানে এই কাজটি করতে থাকুন হালকা হালকা যদি ব্যথা উঠতে থাকে তাহলে আরো করুন। 

মাসাজটি হালকা হালকা করে এবং গোল গোল বৃত্তাকারে ঘোরাতে হবে যেন মনে হয় সন্তানকে দুগ্ধ পান করাচ্ছেন এই কাজটি করার মাধ্যমে আপনার ব্রেনে এক ধরনের সিগনাল পৌঁছাবে আর সেই সিগন্যালের মাধ্যমে দ্রুত আপনার প্রসব বেদনা উঠতে সাহায্য হবে।

২. ডেলিভারি পেইন উঠানোর দ্বিতীয় উপায়ঃ পরবর্তী যে কাজটি করতে হবে সেটি হচ্ছে স**হবাস প্রাচীন কাল থেকে মনে করা হয় গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে অর্থাৎ শেষে সপ্তাহ গুলোতে স**হবাস করলে এটি প্রসব বেদনা উঠতে সাহায্য করে গর্ভবতী মাকে। এক্ষেত্রে স্পাম যেন ভিতরে পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

তাই আপনি যদি চান সাধারণ ও স্বাভাবিকভাবে আপনার প্রসব বেদনা উঠুক তাহলে স্বামী স**হবাস করুন এবং স্পাম ভিতরে নির্গত করতে বলুন এতে করে আপনার ব্রেন সিগন্যাল পৌঁছাবেন এটিও আপনার প্রসব বেদনা উঠতে সহায়তা করবে। আশা করি ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় দুটি জানতে পেরেছেন।

সতর্কতাঃ প্রাকৃতিকভাবে ডেলিভারি পেইন উঠানোর জন্য কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যেমনঃ আপনার অবশ্যই ৩৭ সপ্তাহ কমপ্লিট হয়ে যেতে হবে। যাদের ৩৭ সপ্তাহ কমপ্লিট হয়ে গিয়েছে এখন পর্যন্ত প্রসব বেদনা কোনভাবেই উঠাতে পারছেন না তারা এই উপায়টি ফলো করতে পারেন। তার আগে কোনোভাবেই এই কাজগুলো করা যাবে না কারণ ৩৭ সপ্তাহের আগে আপনার বেবি পুরোপুরি ভাবে ম্যাচিওর হয় না।

ডেলিভারি পেইন না উঠার কারণ

অনেক গর্ভবতী মায়েরায রয়েছে যাদের ডেলিভারি পেইন না উঠার কারণ জানতে চেয়ে থাকে তাদের জন্য মূলত এই আলোচনা। মাতৃগর্ভে একটি শিশু ৪০ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে, ৪০ সপ্তাহে জন্ম নেওয়া শিশুকে সুস্থ ও পরিণত শিশু বলা হয়। ৪০ থেকে ৪২ সপ্তাহের মধ্যে মায়ের ডেলিভারি পেইন ওঠে কিন্তু যদি ৪০ সপ্তাহের মধ্যে ডেলিভারি পেইন না উঠে তবে এর অনেক কারণ রয়েছে যা চিন্তার বিষয়। 

আরো পড়ুনঃ Largo Cream এর কাজ কি? ব্যবহারের নিয়ম

আপনারা হয়তো অনেকেই ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ সম্পর্কে জেনেছেন কিন্তু ডেলিভারি পেইন না ওঠার কারণগুলো অনেকেই জানেন না আর এটা জানা খুবই জরুরী। কারণ এই সময় সবদিক থেকে প্রস্তুত থাকা একজন মায়ের কর্তব্য। তাই এখন করা আলোচনা হচ্ছে ডেলিভারি পেইন না ওঠার কারণ কি সে সম্পর্কে।

  • যদি ৪০ সপ্তাহে মায়ের এমিউনিটিক তরলের পরিমাণ কমে যায় তবে ডেলিভারি পেইন ওঠে না এমন হলে চল্লিশ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া উচিত নয়তো শিশুর গর্ভে মৃত্যু হতে পারে।
  • গর্ভে চল্লিশ সপ্তাহে বাচ্চার মাথা নিচের দিকে চলে আসে কিন্তু যদি বাচ্চা উল্টো থাকে মানে বাচ্চার মাথা উপরের দিকে বা অন্য সাইডে থাকে তবে সে ক্ষেত্রে ডেলিভারি পেইন ওঠার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।
  • যদি গর্ভবতী মায়ের বয়স খুব কম হয় বা বেশি হয় তবে তার হয়তো ডেলিভারি পেইন ৪০ সপ্তাহ হয়ে গেলেও না উঠতে পারে।
  • ডেলিভারি পেইন না ওঠার আরেকটি কারণ হলো যারা প্রথমবার মা হতে যাচ্ছে সে ক্ষেত্রে ডেলিভারি পেইন উঠতে দেরি হতে পারে তাই আপনি জয়ী প্রথমবার মা হন তবে আরও এক দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করে দেখতে পারেন।

ডেলিভারি পেইন উঠার দোয়া

প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের একটি স্বপ্ন থাকে যে নরমালি ডেলিভারি হোক। এমনটা অবস্থায় বিশেষভাবে যে কাজটি করতে হবে সেটা হলো মহান আল্লাহতালার কাছে সহজ ডেলিভারির জন্য দোয়া চাওয়া। ডেলিভারির সময় যখন ঘনিয়ে আসবে তখন কুরআনের একটি আয়াত বেশি বেশি করে পড়বেন যেটি হল সূরা আরাফ এর ৫৪ নম্বর আয়াত।

ডেলিভারি পেইন উঠানোর ইনজেকশন

সকল গর্ভবতী মায়েদের একটি নির্দিষ্ট সময় দেয়া থাকে যার মধ্যে ডেলিভারি পেইন না উঠলে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কর্তৃক ইনজেকশন এর মাধ্যমে ডেলিভারি পেইন তোলা হয়।

ডেলিভারি পেইন উঠানোর ওষুধ

ডেলিভারি পেইন উঠানোর ওষুধ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলেন ডেলিভারি পেইন উঠানোর ওষুধ বলে তেমন কোন ওষুধ নেই। এক্ষেত্রে তারা জানাই হেলদি ডায়েট এবং রেগুলার এক্সারসাইজ মাধ্যমে নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

ডেলিভারি পেইন উঠানোর আমল

অনেক মায়েরা জানতে চেয়ে থাকে নরমাল ডেলিভারি পেইন উঠানোর আমল সম্পর্কে। যে কোন নারীরই প্রত্যাশা থাকে যে নরমাল এবং স্বাভাবিকভাবে ডেলিভারি হোক। স্বাভাবিক এবং নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য আমরা আল্লাহতালার কাছে দোয়া কবুলের সময় গুলোতে দোয়া করতে হবে তাই যারা গর্ভবতী মা রয়েছেন তারা দোয়া করবেন।

এইরকম পরিস্থিতিতে আল্লাহ যেন তার ডেলিভারি বিষয়টিকে সহজ করে দেন সেজন্য ইস্তেগফার দুরুদ তারপরে দোয়া ইউনুস এগুলো বেশি বেশি করে পাঠ করবেন সেই সাথে দান সাদাকা করবেন কারণ এ সমস্ত আমলের মাধ্যমে কঠিন পরিস্থিতিতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন উত্তরের পথ দেখিয়ে দেন এবং সহজ করে দেন।

কত সপ্তাহে বাচ্চা প্রসব হয়

এখন আমরা আলোচনা করব স্বাভাবিক প্রসব বা নরমাল ডেলিভারি কত সপ্তাহে হতে পারে। মায়েদের সবচাইতে কমন প্রশ্ন হচ্ছে কত সপ্তাহে বাচ্চা প্রসব হয় এবং নরমাল ডেলিভারি কত সপ্তাহে হয় এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় সাধারণত ৩৭ সপ্তাহ থেকে ৪২ সপ্তাহের মধ্যে বেশিরভাগ শিশুর নরমাল ডেলিভারি বা স্বাভাবিক প্রসব হয়। এই ৫ সপ্তাহের যেকোনো সময় শিশু জন্ম নিলে সে ডেলিভারিকে নরমাল বা স্বাভাবিক বলা যাবে।

লেখকের শেষ কথা

আশা করছি আপনি উপরের কথাগুলো খুবই মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় ও ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ এ সম্বন্ধে ধারণা অর্জন করতে পেরেছেন। এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে অন্যদের সাথে শেয়ার করে দিবেন । এবং আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট এর মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Comment