অনেকে আছেন যারা কিনা শিশুদের জিংক সিরাপ খাওইয়ে থাকেন কিন্তু উপকারিতা জানেন না। তাই আজকের এই আর্টিকালে বড় কিংবা শিশুদের জিংক সিরাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন তাহলে শিশুদের জিংক সিরাপ এর উপকারিতা এবং জিংক সিরাপ এর কাজ কি সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
জিংক সিরাপ এর উপকারিতা অনেক রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না। আপনি যদি আপনার শিশুকে জিংক সিরাপ খাওয়ানোর কথা ভেবে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে কেননা এই আর্টিকেলে শিশুদের জিংক সিরাপ এর উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ভূমিকা
জিংক ছোট বড় সব বয়সেরই মানুষদের জন্য খুবই উপকারী একটি সাপ্লিমেন্ট। এটি বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি এবং বিভিন্ন ধরনের নামে বাজার রয়েছে। আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছে যারা জিংক সিরাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে তেমন একটা জানেনা তাদের জন্যই মূলত আজকের এই পোস্টটি। জিংক সিরাপ শিশুদের জন্য খুবই উপকারী একটি সাপ্লিমেন্ট।
যেসব শিশুদের মেধা কম, উচ্চতা দিক থেকে খাটো, শরীরে পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে সেসব শিশুদের জন্য জিংক সিরাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলন তাহলে বেশি দেরি না করে zinc syrup এর কাজ কি এবং জিংক সিরাপ খাওয়ার নিয়ম ও জিংক সিরাপ এর অপকারিতা আছে কিনা বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
জিংক সিরাপ এর কাজ কি – zinc syrup
জিংক সিরাপ বাজারে এনেছে এসকেএফ ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেড। জিংক সিরাপ প্রতি চামচে রয়েছে জিংক সালফেট মনোহাইডেট ১০ মিলিগ্রাম। স্বাস্থ্য ও স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য শরীরে জিংক প্রয়োজন এবং শিশুর জন্মের পর কম ওজন এবং অপুষ্টি, ক্যালরি ঘাটতি দূর করতে জিংক সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ Androcap খাওয়ার নিয়ম ও অপকারিতা জানুন
এছাড়াও জিংকের অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, দেরিতে ক্ষত সুখায়, সাদ ও গন্ধের অনুভূতি কমে যায়, রাত কানা হয় এবং অ্যাবেসন এর ঝুঁকি বেড়ে যায়। জিংক সিরাপ আমাদের শরীরে অনেক কাজ করে যেমন
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- ক্ষত দ্রুত শুকায়
- তীব্র ডায়রিয়া রোধ করে
- বৃদ্ধি ও বিকাশে সহায়তা করে
- হজম শক্তি বাড়ায়
জিংক সিরাপ কেন খায়
এই জিংক সিরাপ বাচ্চাদের খাবারের রুচি এবং শরীরের জিংকের ঘাটতি পূরণের জন্য এতটাই চমৎকার কাজ করে যে সকল মায়েদের কাছে জিংক সিরাপটি খুবই পরিচিত। কিছু বাচ্চা আছে খাবার খেতে চায় না খাবারে অরুচি তাদের জন্য এবং অনেক বাচ্চারা আছে পাতলা পায়খানা করে একেবারে নিপীয়ে যায় দুর্বল হয়ে যায় অর্থাৎ পাতলা পায়খানার সাথে জিংক শরীর থেকে বের হয়ে যায়।
সেই জিংকের ঘাটতি পূরণ করার জন্য এই জিংক সিরাপটি চমৎকার কাজ করে। এছাড়াও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ক্ষত নিরাময়, দ্রুত রক্ত জমাট বাধা এবং দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।আপনারা যদি বাচ্চাদের জিংকের অভাব পূরণ করতে চান তাহলে জিংক সিরাপটি সেবন করাতে পারেন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে।
জিংক সিরাপ কিসের কাজ করে – জিংক সিরাপ এর কার্যকারিতা
আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা জিংক সিরাপ কিসের কাজ করে এবং জিংক সিরাপ এর কার্যকারিতা কি কি তা জানতে চেয়ে থাকেন। আপনি যদি জিংক সিরাপ কি কাজ করে তা জেনে না থাকেন তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন। জিংক হচ্ছে মানবদেহের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রয়োজনীয় জিনিস। জিংক সিরাপ আমাদের দেহে অনেক উপকার করে থাকে তাই চলুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।
যাদের মুখে রুচি কম ঠিক মত খাবার খেতে পারেন না তাদের জন্য জিংক খুবই উপকার। যারা পড়ালেখা করার পর পড়া ঠিকমতো মনে রাখতে পারেন না স্মৃতিশক্তি কম তাদের জন্যও এই জিংক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই জিংক শিশুদের মানসিক বিকাশে সহায়তা করে থাকে। আপনার শিশুকে যদি ছোটবেলা থেকেই জিংক খাওয়ানো শুরু করেন তাহলে দ্রুত লম্বা হবে এবং মেধাবী হবে।
তাছাড়া কারো যদি পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে জিংক সিরাপ খেলে দূর হয়ে যাবে। এছাড়া যাদের ত্বকে বিভিন্ন ফুসকুড়ি কিংবা ব্রণের সমস্যা রয়েছে তারা যদি নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জিংক সেবন করে তাহলে ত্বক হয়ে উঠবে কোমল এবং উজ্জ্বল। আপনি কি জানেন জিংক শুধু এই সবই উপকার করে না বরং চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য জিংক সিরাপ খুবই কার্যকরী একটি ওষুধ।
যাদের বয়স হওয়ার আগেই চুল পেকে যায় তারা যদি জিংক সঠিক মত খায় তাহলে এই সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি পাবে। গরমের দিনে জিংক সিরাপ খেলে শরীরে পানি শূন্যতা দূর করে এবং কিডনিকে ভালো রাখতে সহায়তা করে। যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম কিছুদিন পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তারা যদি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জিংক খান তাহলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক গুণ বেড়ে যাবে।
যারা নিজের যৌবন ধরে রাখতে চান বেশি দিন ধরে তারা নিশ্চিন্তে জিংকের উপর ভরসা করতে পারেন।যারা বিভিন্ন কাজে অলসতা বোধ করেন তারা যদি জিংক সিরাপ খাওয়া শুরু করেন তাহলে শরীরের অলসতা দূর হবে এবং কাজ করার প্রতি একটি আলাদা আগ্রহ ও মনোযোগ জেগে উঠবে হলে আপনি খুব সহজেই মনোযোগ সহকারে যেকোন কাজ করতে পারবেন।
জিংক সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
অনেকেই জিংক সিরাপ বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য ইন্টারনেটে জিংক সিরাপ খাওয়ার সঠিক নিয়ম খুঁজে থাকেন তবে মেইন কথা একজন ডাক্তারি ভালো বলতে পারে বয়স ভেদে আপনার শিশুর জন্য কতটুকু পরিমাণে জিংক সিরাপ খাওয়ানো উচিত। চলুন তাহলে এবার আপনাদের বলে দিই সংক্ষিপ্ত আকারে জিংক সিরাপ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
সাধারণত পাতলা পায়খানা জনিত বিভিন্ন জটিলতা রোধে জিংক সিরাপ এর গুরুত্ব অপরিসীম। বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন নামে পাওয়া যায়। জিংক সিরাপটা বয়স ভেদে ১ চামচ ২ চামচ অনেক ক্ষেত্রে ট্যাবলেট খাওয়ানো লাগতে পারে। সিরাপ সরাসরি খাওয়ালে বাচ্চার গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হতে পারে অনেক বেশি বমি হতে পারে সেজন্য আপনাকে ওষুধকে পরিমাণ মতো পানিতে মিক্স করতে হবে।
আরো পড়ুন: সিজারের পর শোয়ার নিয়ম
যেমন ধরেন বাচ্চা ৪-৫ চামচ পানি খায় আপনি যদি হাফ গ্লাস পানিতে মিশন সে ক্ষেত্রে ওষুধটা নিচের দিকে সেটেল হয়ে থাকবে শুধু পানি খাবে ওষুধটা পরিমাণমতো খাওয়া হবে না। সেজন্য আপনি ৩-৪-৫ চামচ সিরাপ এর সাথে ওষুধটা মিক্স করুন পরে বাচ্চাকে খাওয়ান অতিরিক্ত বমি হবে না। সাধারণত ডাক্তাররা এক বেলা অথবা দুই বেলা দিয়ে থাকে।
যদি ডায়রিয়াজনিত সমস্যা থাকে তাহলে এক বেলা অথবা দুই বেলা খাবার কয়েক মিনিট পরে অর্থাৎ ১৫-২০ মিনিট পরে দিয়ে থাকে। খাবার পরে মানে অনেক অভিভাবকরা মনে করে এক দিক থেকে খাবার আরেকদিকে ওষুধ এমনটা না। খাবার পরে মানে বাচ্চাকে ১৫-২০ মিনিট সময় দিতে হবে খাবারটা খাদ্যনালী পাস করার জন্য এর পরে আপনি বাচ্চাকে জিংক সিরাপ দেন পানির সাথে মিক্স করে আর বমি হবে না আশা করি।
জিংক সিরাপ এর উপকারিতা কি
উপরে আলোচনায় আমরা জিংক সিরাপ এর কাজ সম্পর্কে আপনাদের জানালাম এখন জিংক সিরাপ এর উপকারিতা গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। জিংক সিরাপ এর অনেক উপকার রয়েছে। তো তো আপনাদের জানা সুবিধার্থে জিংক সিরাপ এর উপকারিতা নিচে দেয়া হলঃ
- ডায়রিয়া প্রতিরোধঃ ডায়রিয়া প্রতিরোধে জিংক আমাদের শরীরে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যেসব শিশুদের তীব্র ডায়রিয়া রয়েছে তাদের চিকিৎসাতে জিংক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রতিদিন ২০ মিলিগ্রাম জিংক গ্রহণ করলে ডায়রিয়াজনিত সমস্যা দূর হয়ে যায় এবং শিশুদের ওজন বাড়ে।
- হরমনের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণেঃ যেসব মহিলারা হরমনের ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন সেসব মহিলাদের ক্ষেত্রে জিংক খুবই উপকারী কেননা জিংক হরমনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
- ক্ষত নিরাময়ঃ জিংক ত্বককে সুস্থ রাখতে এবং রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে এবং আলসার ও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষত নিরাময় করতে চিকিৎসকরা জিংক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে তাই ক্ষতস্থান দ্রুত শুকাতে জিংক অত্যন্ত কার্যকর।
- মলদ্বারে টিউমারঃ একটি গবেষণা অনুসারে ৫ বছর ধরে যদি কেউ ভিটামিন এ২, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং জিংক সিরাপ গ্রহণ করে তাহলে মলদ্বারে টিউমার পাওয়ার ঝুঁকি ৪০% কমে যাবে।
- বিষণ্ণতা দূর করতেঃ গবেষণা অনুসারে দেখা যায় হতাশ এবং বিষন্নতায় ভোগা ব্যক্তিদের মধ্যে জিংকের মাত্রা কম থাকে তাই অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টের সাথে যদি জিংক সেবন করা হয় তাহলে বিষন্নতা দূর করতে সাহায্য করে।
- শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যাঃ যাদের শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা রয়েছে সেসব রোগীদের জন্য জিংক সিরাপ খুবই উপকার। জিংক মানবদেহে সর্দি, শ্বাসযন্ত্র এবং অন্যান্য শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- হাড় দুর্বলঃ যাদের শরীরে হাড় দুর্বল এবং গাটে ব্যথা করে তাদের জন্য জিংক সিরাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।জিংক হাড়ের ক্ষয় রোধ করে এবং হাড়কে মজবুত এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- গর্ভাবস্থা জটিলতাঃ গর্ভাবস্থায় ওরাল জিংক সিরাপ গ্রহণ করার ফলে তাড়াতাড়ি শিশু জন্মের সম্ভাবনা ১৪% কমে যায় বলে মনে করা হয়। এছাড়াও যে সব গর্ভবতী মহিলারা রাতকানা রোগে ভুগছেন তারাও যদি জিংক সিরাপ সেবন করেন তাহলে এটি রাতে দৃষ্টি ফেরাতে সহায়তা করতে পারে।
- ভিটামিন এঃ যেসব শিশুদের শরীরে ভিটামিন এ এর মাত্রা কম থাকে সেই সব শিশুদের যদি জিংক সিরাপ নিয়মিত খাওয়ানো হয় তাহলে ভিটামিন এ এর মাত্রা কার্যকারী ভাবে বেড়ে যায় বলে মনে করা হয়।
- দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ গবেষণায় জানা গেছে যাদের দৃষ্টি শক্তি কম চোখে কম দেখে তারা যদি জিংক সিরাপ সঠিক নিয়মে খায় তাহলে তাদের দৃষ্টিশক্তি বেড়ে যাবে। সেজন্য দৃষ্টি শক্তি ঠিক রাখতে জিংক সিরাপ সেবন করুন।
- ত্বকে স্বাস্থ্য বজায় রাখেঃ বেশিরভাগ মানুষই জানে জিংক আমাদের শরীরের ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে বেশি সহায়তা করে। ত্বকের ক্ষত নিরাময় থেকে শুরু করে ত্বককে ভিতর থেকে উজ্জ্বল করে এবং ত্বক রাখে কোমল। তাই ত্বকের যত্ন নিতে জিংক সেবন করুন।
শিশুদের জিংক সিরাপ এর উপকারিতা
শিশুদের শরীরে জিংকের ঘাটতি দেখা দিলে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয় যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়া, পুষ্টির অভাব, বাচ্চার ওজন কম হওয়া ইত্যাদি। এ সকল সমস্যা দূর করতে শিশুদের জিংক সিরাপ খাওয়ানো খুবই প্রয়োজন। অনেকেই আছেন যারা কিনা শিশুদের জিংক সিরাপ এর উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। শিশুদের জিংক সিরাপ এ অনেক উপকারিতা রয়েছে তা হলোঃ
- ইমিউন সাপোর্ট বাড়ায়
- মেধা শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
- ক্ষত দূর করতে সাহায্য করে
- তীব্র ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে
- রুচি এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে
- স্বাস্থ্য এবং ত্বক ভালো রাখে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখে
- দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে
- শরীরে জিংকের ঘাটতি পূরণ করে
- ভিটামিন বি এর ঘাটতি পূরণ করে
- ত্বকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষত দূর করে
আশা করি শিশুদের জিংক সিরাপ এর উপকারিতা গুলি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আপনার শিশুর জন্য জিংক সিরাপ খাওয়াতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ গ্যাসটোনা ট্যাবলেট কি কাজ করে ও কিসের ঔষধ
শিশুদের জিংক সিরাপ খাওয়ার নিয়মগুলি
উপরের অংশে শিশুদের জিংক সিরাপ এর উপকারিতা গুলো আপনাদের জানিয়েছি এখন আপনাদের শিশুদের জিংক সিরাপ খাওয়ার নিয়ম গুলি জানাবো অনেকে আছেন শিশুদের জিংক সিরাপ খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানেন না।
- বাচ্চার ওজন ১০ কেজির নিচে হলেঃ খাবার খাওয়ার পর ১ চামচ করে দিনে ২ বার খাওয়াতে হবে। এক কথায় বলতে গেলে প্রতিদিন সকালে খাওয়ার পর ১ চামচ রাতে খাবার খাওয়ার পর ১ চামচ।
- বাচ্চার ওজন ১০ থেকে ৩০ কেজি হলেঃ ভরা পেটে প্রতিদিন ২ চামচ করে ১ থেকে ৩ বার খাওয়াতে পারেন। এক কথায় বলতে গেলে সকালে ১ চামচ দুপুরে ১ চামচ এবং রাতে ১ চামচ ভরা পেটে খেতে হবে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত।
জিংক সিরাপ এর অপকারিতা – জিংক সিরাপ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
জিংক যেমন আমাদের শরীরের জন্য উপকারী তেমনি জিংক বেশি খেলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যদি কোন শিশুকে কয়েক মাস ধরে উচ্চমাত্রায় জিংক খাওয়ানো হয় তাহলে রক্তশূন্যতা এবং অগ্নাশয়ের ক্ষতি হতে পারে এছাড়াও বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই জিংক সিরাপ খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন। জিংক সিরাপ এর অপকারিতা অর্থাৎ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো নিচে উল্লেখ করা হলঃ
- বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
- পেট ব্যথা
- মুখে বিশ্রী স্বাদ
- মাথাব্যথা
- ডায়রিয়া
- ঘুম কম হওয়া
- মাথা ঘোরানো
- শরীর দুর্বল হওয়া
- পাকস্থলী সমস্যা
ওপরের উল্লেখিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো আপনার সন্তানের হয়ে থাকে তাহলে জিংক সিরাপ খাওয়া বন্ধ করে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
বড়দের জিংক সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য জিংক সিরাপ খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে খাওয়ার ৩০ মিনিট পর প্রতিদিন ৪ চামচ করে ১ থেকে ৩বার খেতে পারেন। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াই ভালো।
জিংক সিরাপ এর দাম কত?
অনেকে রয়েছে যারা ইন্টারনেটে জিংক সিরাপ এর দাম কত তা জানতে চেয়ে থাকেন। জিংক সিরাপ মূলত অনেক কোম্পানির রয়েছে। জিংক সিরাপ এর মোট তিনটি বোতল রয়েছে যার মধ্যে ১৫০ মিলি বোতলের দাম পড়বে ৩৫ টাকা এবং ২০০ মিলি বোতলের দাম ৫০ টাকা। এটি আপনারা চাইলে Daraz থেকে অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার করে কিনতে পারেন অথবা যেকোন ফার্মেসিতে কিনতে পেয়ে যাবেন।
জিংক সিরাপ সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞাসা ও প্রশ্নের উত্তর (FAQ)
প্রশ্নঃ বাচ্চাদের জিংক সিরাপ কেন দেয়?
উত্তরঃ বাচ্চার মেধা শক্তি বৃদ্ধি করতে এবং বিকাশের সহায়তা করতে জিংক সিরাপ দেওয়া হয়ে থাকে এছাড়া বাচ্চার ওজন ও আমিষ, ক্যালরি, অপুষ্টি ইত্যাদি বৃদ্ধি করতে জিংক দেওয়া হয়ে থাকে।
প্রশ্নঃ প্রতিদিন কতটুকু জিংক খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ একজন ডাক্তার ভালো বলতে পারে আপনার শিশুর জন্য কতটুকু জিংক খাওয়া প্রয়োজন। তবে আনুমানিক দৈনিক ৪০ মিলিগ্রামের বেশি ব্যবহার করা নিরাপদ।
প্রশ্নঃ জিংক বেশি খেলে কি ক্ষতি হয়?
উত্তরঃ কেউ যদি অতিরিক্ত মাত্রায় এবং দীর্ঘদিন যাবত জিংক সিরাপ সেবন করে তাহলে বমি বমি ভাব, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রশ্নঃ সবচেয়ে ভালো জিংক সাপ্লিমেন্ট কোনটি?
উত্তরঃ বাজারে অনেক ধরনের জিংক পাওয়া গিয়ে থাকে তবে তার মধ্যে থেকে সবচেয়ে সেরা জিংক হচ্ছে Thorne Zinc Picolinate এটি অনেকেরই পছন্দ এবং খাওয়ার নিয়ম অনেকটাই সহজ।
প্রশ্নঃ জিংক খেলে ক্ষুধা লাগে কেন?
উত্তরঃ জিংকের মধ্যে রয়েছে কাপলড রিসেপ্টর 39 যা অ্যান্টিরিক স্নায়ুতন্ত্রে সক্রিয় করে এবং জিংক দ্রুত খাবার হজম করে যার কারণে কিছুক্ষণ পর পর ক্ষুধা লাগে।
জিংক সিরাপ এর উপকারিতা লেখকের শেষ কথা
আপনার শিশুকে জিংক সিরাপ খাওয়ানোর আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। আজকেরে এই পোস্টে জিংক সিরাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এছাড়াও জিংক সিরাপ এর কাজ কি এবং শিশুদের জিংক সিরাপ খাওয়ার নিয়ম আরো অনেক বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
জিংক সিরাপ সবাই খেতে পারবে তবে এটি একজন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হবে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জিংক সিরাপটি শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় কারণ এটি শিশুদের জন্য খুবই উপকার। যেসব শিশুরা ঠিকমতো খাবার খেতে চাই না তাদেরকে যদি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জিংক সিরাপ খাওয়ানো হয় তাহলে দুই গুণ পর্যন্ত ক্ষুধা বেড়ে যাবে এবং মুখে রুচি ফিরে আসবে।
আশা করি আপনি পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। জিংক সিরাপ সম্পর্কে যদি আপনার কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে নিচে কমেন্টে করে আমাদেরকে জানাতে পারেন। পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই বন্ধু ও পরিবারের সাথে শেয়ার করে দিবেন ধন্যবাদ।
৭ বছরের বেবি কে একটানা কয়টি জিংক সিরাপ খাওয়ানো যাবে