ইতালি হচ্ছে একটি গণপ্রজাতন্ত্র রাষ্ট্র। প্রতিবছরই ইতালির সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ করে থাকে ঠিক তেমনি ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে প্রচুর সংখ্যক মানুষ নিবে। আপনি যদি ইতালিতে যাওয়ার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেল পোস্টটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা এই আর্টিকেলে ইতালি স্পন্সর ভিসা ২০২৪ আবেদন এবং ইতালি স্পন্সর ভিসা খরচ সম্পর্কে আলোচনা করব।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই স্বপ্ন ইতালিতে যাওয়া এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করা কিন্তু বেশিরভাগ মানুষেরই এই স্বপ্ন পূরণ হয় না কারণ তারা জানে না কিভাবে ইতালি স্পন্সর ভিসা আবেদন করতে হয় কিভাবে যেতে হয় খরচ কত ইত্যাদি আপনি যদি তাদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন আর আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়েন তাহলে ইতালি স্পন্সর ভিসা নিয়ে আপনার মনে আর কোন প্রশ্ন থাকবে না।
ভূমিকা
বর্তমানে বাংলাদেশ প্রতিটা ছেলেরই এখন স্বপ্ন সরকারি চাকরি না বরং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার কারণ ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালি হচ্ছে অন্যতম আর বাংলাদেশ থেকে সকল বয়সের মানুষই ইতালি যেতে অনেক পছন্দ করে। এর বিশেষ কারণ হচ্ছে ইতালিতে নাগরিকত্ব পাওয়া খুবই সহজ অন্যান্য ইউরোপের দেশের তুলনায় আর সেখানকার বেতন অনেক বেশি এবং আরো সুযোগ-সুবিধা তো রয়েছেই।
ইতালিতে বর্তমানে অনেক অবৈধ পথে গিয়ে প্রতারণা শিকার হচ্ছেন তাই অবৈধ পথে ইতালিতে না গিয়ে বৈধ পথে ইতালি স্পন্সার ভিসা নিয়ে যান দেখবেন অনেক সুযোগ সুবিধা পাবেন এবং বেতনের কোন ঘাটতি হবে না। অনেকেই জানে না কিভাবে ইতালি স্পন্সর ভিসা ২০২৪ আবেদন করতে হয় যা এই পোস্টে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো এর পাশাপাশি ইতালি ভিসা আবেদন লিংক ও ইতালি স্পন্সর ভিসা খরচ সম্পর্কে আলোচনা করব।
ইতালি স্পন্সর ভিসা কি
ইটালি স্পন্সার ভিসা আবেদন সম্পর্কে জানার আগে প্রথমে আপনাকে আগে জানতে হবে ইতালি স্পন্সর ভিসা টা আসলে কি। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন স্পন্সার বলতে আমরা যেটা জানি সেটা হচ্ছে ব্যয় বা বহন করা বা বিধি মোতাবেক প্রতিশ্রুতি দেওয়া এটা হচ্ছে স্পন্সরের অর্থ। আর স্পন্সরের ইংলিশ শব্দ হচ্ছে Lagal Commitment আর এই লিগাল কমিটমেন্ট অর্থ হচ্ছে আইনগত প্রতিশ্রুতি দেওয়া।
আরো পড়ুনঃ বোয়েসেল বিদেশি নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
তো ইতালি স্পনসর ভিসা বলতে বুঝাচ্ছে যে ধরেন ইতালিতে একজন মালিক আছেন তার একটি প্রতিষ্ঠানে আছে এবং সেই প্রতিষ্ঠানে তার লোক লাগবে আর সেই লোক আনার প্রয়োজন মনে করে তখন সেই লোকের চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া এবং তাকে থাকার জায়গা এবং পুরোপুরি ব্যয় ভার এই বিষয়ে একটা কমিটমেন্ট সরকারের কাছে জমা দেওয়া লাগে একজন লয়ার এর মাধ্যমে।
তবে এটা কিন্তু সবার জন্য গ্রহণযোগ্য না অর্থাৎ ইতালিতে যিনি মালিক তাকে অবশ্যই প্রমাণপত্র দেখাতে হবে যে তার একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং সেখানে কি প্রয়োজনীয় লোক লাগবে সকল প্রমাণ কাগজপত্র সরকারের কাছে জমা দিতে হবে এবং তার প্রতিষ্ঠানের যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে সরকার অনুমতি দিবে বাইরে থেকে লোক আনার জন্য।
ইতালি স্পন্সর ভিসা ২০২৪ আবেদন
আপনার নিশ্চয় জানেন যে ইটালিয়ান গভারমেন্ট এই ২৩ সাল থেকে ২৫ সালের মধ্যে সাড়ে চার লক্ষ কর্মী নিবে এইটা বিভিন্ন দেশ থেকে নিবে শুধুমাত্র বাংলাদেশ থেকে নিবে না আর এই সাড়ে চার লক্ষের মধ্যে ১ লক্ষ ৫১ হাজার নিবে এই ২৪ সালে। তো যারা আপনারা সেনজেন যে কোন কান্ট্রি যেকোনোভাবে ঢুকতে চান বা ইতালিতে জব নিয়ে যেতে চান বা ইতালি তে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান তাদের জন্য এটা একটি সুবর্ণ সুযোগ।
এক্ষেত্রে কোনরকম কোন একাডেমিক কোয়ালিফিকেশনের ব্যাপার নাই কোন আইলসের ব্যাপার নাই বা বয়সের কোন দরকার নাই শুধুমাত্র ইতালিয়ান কোন এমপ্লয়ার যদি আপনাকে এপয়েন্ট করে আপনাকে যদি জব কন্টাক দেয় আপনার জন্য নলস্ত জন্য আবেদন করে তাহলেই আপনারা কিন্তু জব নিয়ে ইতালিতে যেতে পারবেন।
তো এই সুযোগটা যেহেতু খুব অল্প সময়ের জন্য অর্থাৎ ২০২৩, ২০২৪ এবং ২০২৫ তিন বছরের জন্য ২৩ সালে অলরেডি চলে গেছে অনেক বাংলাদেশি মানুষ কিন্তু ২৩ এ ইতালিতে গিয়েছে তো ২৪ সালের আবেদন অলরেডি শুরু হয়েছে। ২৪ সালে এই সুযোগটা নিলে তারপরে যদি কোন কারণে মিস হয় তাহলেও কিন্তু ২৫ সালে আবেদন করার সুযোগ থাকছে।
ইতালি স্পন্সর ভিসা ২০২৩ আবেদনের সময়
ইউরোপে বসবাসের ক্ষেত্রে অভিবাসন প্রত্যাশীদের অন্যতম পছন্দের দেশ ইতালি উচ্চশিক্ষা ওয়ার্ক পারমিট ও উন্নত জীবনের আশায় প্রতি বছরই দেশটিকে গন্তব্য হিসেবে বেছে নেন বাংলাদেশের সহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক তবে বৈধভাবেই তালিকা বসবাসের সুযোগ পায় না অনেকেই তাই সেখানে অবৈধ পথে ঝুঁকি নিয়ে প্রবেশ করছেন বহু মানুষ।
আরো পড়ুনঃ দুবাই জব ফর বাংলাদেশী
অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ থাকাতে স্পন্সর ভিসায় কাজের সুযোগ দিচ্ছে ইতালি এক্ষেত্রে তৎপর কিছু অসাধু চক্র চলতি বছর স্পন্সর ভিসায় আবেদনের ক্ষেত্রে দালালদের দৌড়াতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বহু বাংলাদেশী। ইতালিতে দেড় লাখ শ্রমিক নেয়ার কথা থাকলেও দালালদের খপ্পরে পড়ে বাতিল হয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ ভিসার আবেদন এক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য মাধ্যমিক ইতালি যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
আবেদন বাতিল হওয়ার পেছনে দালালদের ভুল তথ্য এবং প্রতারণাকে দায়ী করছে ইমিগ্রেশন নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশের সংস্থাগুলো। এদিকে এই বছর আসন্ন ক্লিক ডে নিয়ে নিয়েও তৎপর সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র এবার স্থায়ী শ্রমিক, সিজিনাল শ্রমিক, গৃহকর্মী এই ৩ ক্যাটাগরিতে ভিসা আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ক্লিক ডের জন্য ১৮, ২১ এবং ২৫ মার্চ আবেদন জমা দিতে পারবেন আগ্রহীরা।
ইতালি ভিসা আবেদন লিংক
ইতালি পশ্চিম ইউরোপে অবস্থিত একটি দেশ যে দেশে যাওয়ার স্বপ্ন অনেকেই দেখে থাকেন কিন্তু কারো কারো স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হয় আবার কারো স্বপ্ন পূরণ হয় না কারণ অনেকেই দালালের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয়ে যায় এছাড়া অনেকেই আবেদন কোথায় গিয়ে করতে হয় অর্থাৎ অফিসিয়াল লিঙ্ক খুঁজে পান না আবেদন করার জন্য।
কারণ ইতালি ভিসা আবেদন করতে হলে অবশ্যই আপনাকে অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করতে হবে তাছাড়া আপনি আবেদন করতে পারবেন না। আপনার সুবিধার্থে ইতালি ভিসা আবেদনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের লিংক দিয়ে দেওয়া হলো ( https://visa.vfsglobal.com/bgd/en/ita/apply-visa ) এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনারা ভিসা ক্যাটাগরি সিলেট করে এবং আপনার যাবতীয় তথ্য দিয়ে খুব সহজে ইতালি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ইতালি স্পন্সর ভিসা খোলা নাকি
অনেকেই ইতালি স্পন্সর ভিসা খোলা নাকি বন্ধ জানতে ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করে থাকেন তাদেরকে বলব স্পন্সর ভিসা চালু রয়েছে আপনারা জানেন যে ২০২৩ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ৫২ হাজার শ্রমিক নিবে ইতালি সরকার ঘোষণা দিয়েছে এবং সেই প্রেক্ষাপট অনুযায়ী স্পন্সর ভিসা চালু রয়েছে এবং আপনারা মার্চ মাস থেকে দ্বিতীয় শিফটে আবেদন করতে পারবেন।
ইতালি স্পন্সর ভিসা খরচ
যিনি ইতালিয়ান নিয়োগ কর্তা অর্থাৎ যিনি নিয়োগটা দিবেন তিনি যদি নিজে আবেদন করে সেক্ষেত্রে খরচ পড়বে মাত্র ১৬ ইউর যেটা বাংলাদেশি টাকায় ১৮৯১ টাকা এবং তিনি যদি একজন উকিল এর মাধ্যমে কাজটি করেন তাহলে সর্বোচ্চ ৩০০ ইউরো মত খরচ হবে যা বাংলাদেশি টাকায় ৩৫ হাজার টাকার মত খরচ হবে।
আরো পড়ুনঃ মালয়েশিয়া শ্রমিক নিয়োগ বিস্তারিত জানুন
তারপর নুলস্থা পাওয়ার পর দেশে পাঠাবে, দেশে পাঠানোর পর তারপর ভিসার জন্য আবেদন করা লাগবে। আপনি যদি নিজে ভিসা আবেদন করেন তাহলে খরচ পড়বে ১৬ হাজার টাকার মত আর আর যদি কাজটি আপনি কোন এজেন্সির মাধ্যমে করেন তাহলে খরচ হবে ৩৫ হাজার টাকার মত। এক কথায় সব মিলিয়ে ১ লক্ষ টাকার মধ্যে ইতালি স্পন্সর ভিসা পেয়ে যাবেন।
ইতালি স্পন্সর ভিসার সুবিধা
ইতালি স্পন্সর ভিসার অনেক সুবিধার রয়েছে যেমন আপনি যদি স্পন্সর ভিসায় ইতালি যান তাহলে আপনার সম্পূর্ণ থাকা খরচ ব্যয়ভার মালিক বহন করবে এবং অন্যান্য ভিসার চাইতে ইতালি স্পন্সার ভিসার খরচ খুবই কম লাগে এছাড়া আপনি হয়তো জানেন ইতালি স্পন্সার ভিসা মানে বৈধভাবে ইতালি যাওয়া তাই আর কি লাগে এটাই মূলত স্পন্সর ভিসার সুবিধা।
ইতালি স্পন্সর ভিসার মেয়াদ কতদিন হয়ে থাকে
ইতালিতে স্পনসার ভিসারটা সাধারণত ২ বছর মেয়াদের দিয়ে থাকে। এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার মালিকের উপর অর্থাৎ যিনি আপনাকে নুরস্তা দিয়েছে তিনি ১ বছরের মেয়াদে আপনাকে নিতে পারে আবার ২ বছর মেয়াদেও নিতে পারে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে ইতালি স্পন্সর ভিসা ২০২৪ আবেদন এবং ইতালি স্পন্সর ভিসা খরচ কত সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি। আশা করি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়েছেন। আপনি যদি ইতালি যাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে আপনি দ্রুত ইতালি স্পন্সার ভিসায় আবেদন করুন কারন এটাই একটি সুবর্ণ সুযোগ। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাতে পারেন ধন্যবাদ।