চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞ সেরা ১০ ডাক্তারপ্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার পর মা এবং বোনেদের অনেক বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত যেমন হিমোগ্লোবিন মাত্রা কমে গেলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকে আছেন যারা গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় জানে না তাই এই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় এবং হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয় কি সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করব।
গর্ভবস্থায় বেশিরভাগ মা-বোনেরা রক্তশূন্যতায় ভোগেন এছাড়াও আয়রনের ঘাটতির কারণে রক্ত শূন্যতা দেখা দেয়। রক্তশূন্যতা দেখা দিলে গর্ভাবস্থায়ী খুবই জটিলতার কারণ। তাই এই পোস্টটি গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় এবং গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয় কি সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব। বেশি দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে কি হয়
বিশ্বব্যাপী গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতা এটি ৫০ শতাংশ গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে এবং কিছু দেশে রয়েছে গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতার কারণে ২০ শতাংশ মহিলা মারা যায়। ধরা যায় এটি একটি খুব মারাত্মক রোগ। তাই গর্ভ অবস্থায় হিমোগ্লোবিন সম্পর্কে সতর্ক থাকা খুবই জরুরী।
আরো পড়ুনঃ কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়
অনেকেই জানেনা বা অনেকেই জানতে চাই যে গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে কি হয় সেটা আপনাদেরকে আজকে এই অংশে বলবো। গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন এটাকে বলা হয় গর্ভকালীন সময় রক্তশূন্যতা।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে দেখা যায় চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে যায়, শরীর ক্লান্ত অনুভব হয়, সব সময় ঠান্ডা লাগা অনুভূতি হয় এবং মাথা ঘোরা আরো নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে সেগুলো জানতে হলে নিচের গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার লক্ষণ অংশটি পড়ুন।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়
সাধারণত যারা মা এবং বোনেরা প্রথমবার গর্ভবতী হয়ে থাকেন তারা অনেক বিষয় নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন তার ভিতর একটি হলো হিমোগ্লোবিন সম্পর্কে জানা থাকলে তো আর কোন কথাই নেই কারণ এই হিমোগ্লোবিন মানে গর্ভাবস্থায় শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দেওয়া বোঝায়।
প্রায় ৫০ শতাংশ মহিলারই এই সমস্যাটি দেখা দেয়। তাই এই অংশে আমরা আপনাদের জানাবো গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় গর্ভাবস্থায়।
ডাক্তারদের মতে হিমোগ্লোবিন ১০.৬ থেকে ১১ এর ভিতর যদি হিমোগ্লোবিন থাকে তাহলে কোন রক্ত বা ইনজেকশন দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তাছাড়া যদি ডাক্তার ইনজেকশন দিতে বলে তবে দিতে পারেন কিন্তু এটি ওষুধ খেয়েও হিমোগ্লোবিন মাত্রা কমিয়ে আনা যায়।
আর যদি আপনার হিমোগ্লোবিন মাত্রা ১১ বেশি হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে আপনার শরীরে বিভিন্ন জায়গার ইনফেকশন হতে পারে এবং বাচ্চা নষ্ট হয়ে যেতে পারে আরো নানা ধরনের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আশা করি গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় বিষয়টা জানতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয় কি
লোহা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে। অনেক মা-বোনেরাই আছেন গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে যায় এবং গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয় কি সেই সম্পর্কে জানেন না তাই এই অংশে আমরা গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে কি করবেন তা নিয়ে আলোচনা করব।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে আপনাকে বেশি বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে যেমন কচু শাক, লাল শাক, চিংড়ি, দুধ, দেশি মুরগি এবং খেজুর এছাড়াও ক্যালসিয়াম ফাইবার এবং কার্বোহাইড হিমোগ্লোবিন ঘাটতি পূরণ করতে বেশি সহায়তা করে। এছাড়াও মধু রয়েছে যা আয়রনে ভরপুর।
আরো পড়ুনঃ নাভির চারপাশে ব্যথার কারণ ও করণীয়
আয়রন ছাড়া মধুতে রয়েছে ম্যাগানিজ এবং কপার যা আপনার শরীরে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে বেশ সহয়তা করে। এবং সুষম খাদ্যের পাশাপাশি ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেতে হবে কারণ আয়রন সরাসরি শরীরে ঢুকে যেতে পারে।
যদি আপনার হিমোগ্লোবিন ১১ হয় সেক্ষেত্রে সিজার করার সময় রক্ত লাগবে কারণ সিজারের সময় অনেক রক্তক্ষরণ হয়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয় কি তা সম্পর্কে।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত থাকা দরকার
হিমোগ্লোবিন আমাদের শরীরে অক্সিজেন জোগাতে বেশ সহায়তা করে। আমাদের শরীরে লৌহ সমৃদ্ধ এক কথায় বলতে গেলে এক ধরনের প্রোটিন এর নামই হচ্ছে হিমোগ্লোবিন। কিছু কিছু মহিলাদের গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণে রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকি ডাক্তাররা তাই অনেকেরই মনেও প্রশ্ন জাগতে পারে গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত থাকা দরকার।
অর্থাৎ গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত থাকা স্বাভাবিক সবকিছু নিয়ে এই অংশে আলোচনা করব আপনাদের সাথে। ডাক্তার তামান্না চৌধুরী জানান প্রতিটা গর্ভাবস্থায় মহিলার জন্য শরীরে হিমোগ্লোবিন ১৩-১৬ মিডিগ্রাম থাকা উচিত।
এবং তার থেকে যদি হিমোগ্লোবিন কম হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে শরীরে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে যেমন বাচ্চাটা খারাপ হয়ে যেতে পারে, কম বয়সে বাচ্চাটা পানি ভেঙ্গে বের হয়ে যেতে পারে , বিভিন্ন জায়গায় ইনফেকশনে হতে পারে।
তাই গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে আপনি একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন অথবা উক্ত আলোচনায় গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয় কি সেই সম্পর্কে আপনাদের আগেই জানিয়েছি সেগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে
অপরের উক্ত আলোচনায় গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় আপনারা ইতিমধ্যে জেনে গেছেন। এই অংশে আমরা জানবো গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে সে সম্পর্কে। ছয় থেকে পাঁচ মাস গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন হলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয় যা মা এবং শিশুর জন্য খারাপ।
আপনি যদি একজন গর্ভবতী মহিলা হয়ে থাকেন এবং আপনার যদি রিপোর্টে হিমোগ্লোবিন মাত্রা কম এসে থাকে তাহলে এই ৬টি খাবার আপনার খাবার তালিকায় যুক্ত করুন। যাদের হিমোগ্লোবিন কম তারা অবশ্যই এই ৬টি খাবার আপনার খাবার তালিকায় রাখবেন।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন বাড়ায় যে ৬টি খাবার
- কলাঃ কলার মধ্যে আয়রন ক্যালসিয়াম রয়েছে এছাড়াও আরও অনেক গুণ রয়েছে যে সমস্ত মা এবং বোনদের হিমোগ্লোবিন রয়েছে তাদের প্রতিনিয়ত দুটো করে কলা খাওয়া উচিত।
- আপেলঃ আমরা সবাই জানি যে আপেল একটি সর্বগুণ সম্পন্ন ফল তাই চেষ্টা করবেন প্রতিদিন একটি করে আপেল খাওয়ার।
- কালো চানাঃ আপনি চাইলেকালো চানা সিদ্ধ করেও খেতে পারেন এবং ভিজিয়ে রেখে পরের দিন খেতে পারে। তবে কাঁচা খাওয়া চাইতে এর মধ্যে একটু কাঁচা পেঁয়াজ সামান্য একটু নুন মিশিয়ে খেতে পারেন। কালো চানা মায়ের শরীরে হিমোগ্লোবিন মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
- বেদানাঃ প্রতিদিন একটা করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন অনেক ক্ষেত্রেই বেদানাতে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয় বা কেউ কেউ হজম করতে পারে না তাই যদি দেখেন বেদানা খেলে আপনার নানা রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে তাহলে প্রতিদিন খাওয়ার প্রয়োজন নেই সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন খেতে পারেন।
- কালো কিসমিসঃ প্রতিদিন আপনারা খেতে পারেন এবং কালো কিসমিসের সাথে খেজুর মিশিয়েও খেতে পারেন যা আপনার হিমোগ্লোবিন বাড়াতে আপনার শরীরে রক্ত এক ঘাটতে থাকলে পূরণ করতে সহায়তা করে।
যদি কোন মায়ের হিমোগ্লোবিন কম থাকে বা রক্তশূন্যতা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে উপরের উল্লেখিত খাবারগুলি নিয়মিত খেতে পারেন ফলে আপনার হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। আশা করি গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে জানতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার লক্ষণ
যদি কোন মায়ের গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে যায় তাহলে কিভাবে বুঝবেন যে আপনার গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেছে তাই এই অংশে গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার কিছু লক্ষণ রয়েছে যা নিচে উল্লেখ করা হলো।
আরো পড়ুনঃ মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম এবং ঘরোয়া উপায়
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার লক্ষণ গুলি হলঃ
- চেহারা ফ্যাকাসে হওয়া।
- শরীর ক্লান্ত অনুভব হওয়া।
- সামান্য একটু কাজ করলে শরীর দুর্বল লাগে।
- কম বয়সে বাচ্চাটা পানি ভেঙ্গে যাওয়া।
- বিভিন্ন জায়গায় ইনফেকশনে হতে পারি।
- সব সময় ঠান্ডা লাগা।
- কোন কাজে মনোযোগের অভাব দেখা দেওয়া।
- বুক ব্যথা হতে পারে।
- জিব্বায় ঘা হওয়া।
- শ্বাস-কষ্টের সমস্যা হওয়।
- আপনার মাথা থেকে শুরু করে হার্ট এবং লাঞ্চ এর নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে।
উপরের উল্লেখিত লোকন বলে যদি আপনার ভিতর থেকে থাকে তাহলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন এর পাশাপাশি ওপরের উল্লেখিত গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে সে বিষয়ে আগেই আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি সেই খাবারগুলি ঠিকমতো খেলে হিমোগ্লোবিন বাড়বে ইনশাআল্লাহ।আশা করি বুঝতে পেরেছেন গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার লক্ষণগুলো সম্পর্কে সম্পর্কে।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত থাকা স্বাভাবিক
বেশিরভাগ গর্ভবতী মহিলারাই প্রশ্ন করে থাকে গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত থাকা স্বাভাবিক। ডাক্তারদের মতে অনেক গর্ভবতী মহিলাদের হিমোগ্লোবিন মাত্রা বেড়ে গেলে রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। হিমোগ্লোবিন বিষয় নিয়ে একটি আলোচনায় তামান্না চৌধুরীর মতে ১৩ থেকে ১৬ মিলিগ্রাম হিমোগ্লোবিন
থাকা স্বাভাবিক।
শেষ কথা
একজন গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিন মাত্রা চেক করা এবং সতর্ক থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ সিজারের সময় অনেক রক্তকর হয় ফলে আপনার যদি আগেই হিমোগ্লোবিন মাত্রা কম হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে তখন বিভিন্ন রকম সমস্যা এক কথায় বলতে গেলে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
সে ক্ষেত্রে আপনার এবং শিশুর মারাত্মক জটিলতা দেখাতে পারে। আজকের এই আর্টিকালে গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় এবং গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয় কি সে বিষয়েও আপনাদের জানিয়েছি।
এছাড়াও আরো অনেক বিষয়ে আলোচনা করেছি যেমন গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে। যে খাবারগুলি আপনি আপনার খাবার তালিকায় রাখলে হিমোগ্লোবিন মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তবে তবে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন।ধন্যবাদ।